স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পাকিস্তান যান আদিল, ফেরে জঙ্গি হয়ে; গোয়েন্দা রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: কাশ্মীরের পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আদিল ঠোকরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। অনন্তনাগের বিজবেহরার গুরি গ্রামের বাসিন্দা আদিলের কাহিনি কেবল কাশ্মীর নয়, গোটা দেশকে চমকে দিয়েছে।
তদন্ত বলছে, ছোট থেকেই আদিলের মধ্যে উগ্রপন্থার বীজ বপিত হয়েছিল। বিভিন্ন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেছিল সে। ২০১৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পাকিস্তানে পাড়ি দেয় আদিল। সেখানে যাওয়ার পর থেকেই তার সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরিবার থেকেও দূরত্ব বাড়িয়ে নেয় সে। গোয়েন্দারা আদিলের পরিবারের উপর নজর রাখলেও, বিশেষ কোনও তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
পাকিস্তানে পৌঁছানোর পরে টানা ৮ মাস আদিলের কোনও সন্ধান মেলেনি। এই সময়ে সে আদর্শগত প্রশিক্ষণ এবং প্যারামিলিটারি জঙ্গি ট্রেনিং নেয় বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে উঠে এসেছে। এরপর আদিল লস্কর-ই-তইবা-র ছায়াতলে চলে যায়। ২০২৪ সালে আবার তার গতিবিধির তথ্য হাতে আসে গোয়েন্দাদের। জানা যায়, পুঞ্চ-রজৌরির দুর্গম পাহাড়ি এলাকা পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে আদিল। তার সঙ্গী ছিল আরেক জঙ্গি পাকিস্তানের বাসিন্দা হাসিম মুসা।
ভারতে প্রবেশের পর আদিল অনন্তনাগের জঙ্গল ও পাহাড়ি এলাকায় গা ঢাকা দেয়। বিশেষ সূত্র বলছে, কিশতোয়ার এলাকায় একবার তার উপস্থিতি শনাক্ত হলেও, পরে সে ফের অদৃশ্য হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, অনন্তনাগের কোনও বিচ্ছিন্ন গ্রামে সে পাকিস্তানি সঙ্গীকে আশ্রয় দিয়েছিল।
কয়েক সপ্তাহ ধরে আদিল উপত্যকায় লুকিয়ে ছিল এবং চেষ্টা করছিল কাশ্মীরে গুপ্ত সন্ত্রাসী সেলগুলোকে পুনরায় সক্রিয় করতে। ঠিক এই সময়েই কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে খুলে দেওয়া হয়, যা জঙ্গিদের জন্য সুযোগ এনে দেয়। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ২২ এপ্রিল, পহেলগাঁওতে আদিল ও তার দল ২৬ জন নিরীহ পর্যটককে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এ ঘটনার পর থেকে গোয়েন্দারা তৎপর হয়ে ওঠে। দীর্ঘ অনুসন্ধান ও অভিযানের পর প্রশাসন আদিল ঠোকরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়।