Thursday, January 23, 2025
আন্তর্জাতিক

পাকিস্তান থেকে জাহাজ ভর্তি বিস্ফোরক পৌঁছালো চট্টগ্রাম বন্দরে, বড়সড় নাশকতার আশঙ্কা 

কলকাতা ট্রিবিউন ডেস্ক: বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তান থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের চালান এসে পৌঁছেছে। এই ঘটনা শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্যই নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের জন্যও গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই বিস্ফোরকগুলি বাংলাদেশে বেড়ে ওঠা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নাশকতার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।

ঘটনার বিশদ বিবরণ

গত ২১ ডিসেম্বর পাকিস্তানের করাচি থেকে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছয়। এতে ছিল বিপুল পরিমাণ ‘সিসমিক ইমালসন’ নামের বিস্ফোরক, যা যে কোনও বৃহৎ নির্মাণ বা স্থাপনা ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। আওয়ামি লিগের দাবি অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের একজন আধিকারিক কন্টেনারগুলির ছবি প্রকাশ্যে আনেন। কন্টেনারগুলিতে লাল রঙে স্পষ্টভাবে “বিস্ফোরক” শব্দটি লেখা ছিল।

বাংলাদেশ নৌবাহিনী কয়েক ঘণ্টার জন্য কন্টেনারগুলিকে আটক করলেও, পরে অজ্ঞাত কারণে সেগুলি ছেড়ে দেওয়া হয়। আওয়ামি লিগ এই ঘটনা প্রকাশ্যে এনে দাবি করেছে, এটি দেশের নিরাপত্তার জন্য এক গুরুতর হুমকি।


ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?

এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে আটক করা হয়েছিল অস্ত্র বোঝাই ১০টি ট্রাক, যা পাকিস্তান থেকে ঘুরপথে আনা হয়েছিল। সেবার এই অস্ত্র অসমের আলফা জঙ্গিগোষ্ঠীর নেতা পরেশ বড়ুয়ার কাছে সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল। হাসিনা সরকারের আমলে সেই ঘটনায় জামাত নেতাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।

ইউনূস সরকারের ভূমিকা ও পাকিস্তানের প্রভাব

বর্তমান ইউনূস সরকারের আমলে বাংলাদেশে মৌলবাদ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করা হয়েছে, এমনকি পাকিস্তানের জাহাজগুলিকে বাংলাদেশে অবাধে নোঙর করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বাংলাদেশে সক্রিয় সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে অস্ত্র ও অর্থ সাহায্য দিচ্ছে।

ভারতে সন্ত্রাসের পরিকল্পনা

গোয়েন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, পাকিস্তান থেকে আসা এই অস্ত্র ভারতের অসম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরলের মতো রাজ্যগুলিতে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। আনসারুল্লা বাংলা টিম ইতিমধ্যেই ভারতে তাদের ঘাঁটি শক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। চট্টগ্রামে পাকিস্তানি বিস্ফোরকের চালান ভারতের জন্য নাশকতার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

পাকিস্তান থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে বিপুল বিস্ফোরক আসার ঘটনা বাংলাদেশ এবং ভারতের জন্য এক মারাত্মক হুঁশিয়ারি। এই চালান শুধু আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করবে না, বরং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।