আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে মন্দিরে ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়া হল পাকিস্তানে, গ্রেফতার ২৬
ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের কারক জেলায় একটি হিন্দু মন্দির ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মৌলবাদী ইসলামিক দলের কিছু সমর্থক। বুধবার কারক জেলার টেরি গ্রামে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ২৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পাকিস্তান পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা একটি উগ্র ইসলামপন্থী দলের সদস্য বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মীরা। পাক মানবাধিকার মন্ত্রী শিরীন মাজারি টুইট করে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাক পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ভয়াবহ এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত জনতা উল্লাস করতে করতে হাতুড়ি-বাটাল দিয়ে মন্দিরটি ভাঙচুর করছেন। এরপর আগুন দিয়ে ধরিয়ে দিচ্ছেন। মন্দিরের চারপাশ ঘিরে ধোঁয়া উড়তেও দেখা যায়।
জেলা পুলিশ প্রধান ইরফানুল্লাহ খান বলেছেন, স্থানীয় মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের উসকানিতে অন্তত ১২০০ মানুষ হিন্দু মন্দিরটি হামলা চালায়। ভিডিও ফুটেজ দেখে ২৬ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ধর্মীয় নেতাদের ওয়াজ শুনে একদল মুসলমান মন্দিরটিতে হামলা চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
পাকিস্তান হিন্দু কাউন্সিলের নেতা রমেশ কুমার বলেন, এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়, পাকিস্তানে প্রায় সময় হিন্দু সম্প্রদায়সহ অন্য সংখ্যালঘুরা সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে সংখ্যাগুরু মুসলমানদের হাতে নির্যাতিত হন। তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের সামনে গিয়ে এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৯৭ শতাংশ মুসলিম এবং হিন্দু জনসংখ্যা মাত্র ২ শতাংশ। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে ধর্মীয় দিক থেকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে বছরে অন্তত ১২০০ সংখ্যালঘু মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তর করা হয়।

গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ডিজিটাল সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত।

