Saturday, April 20, 2024
জীবনযাপন

সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার উপায়

সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা ব্যক্তিরা বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা ব্যক্তিদের তুলানায় বেশি সফল বলে এক গবেষনায় দেখা গেছে। কারণ, সকালে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠতে পারলে কাজ এবং অবসর দুটোর জন্যই অনেক বেশি সময় পাওয়া যায়। কিন্তু লাগামছাড়া ঘুমটাকে যেন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ যায় না। হ্যাঁ অসংখ্য পরিশ্রমী মানুষ এই সমস্যাতেই ভুগছেন। আজকালকার ফেসবুকের যুগে রাতে অনেকক্ষণ জেগে সকালে ওঠা সত্যি চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। কিন্তু উপায় কিছু আছে। আসুন জেনে নেই, সকালে ঘুম থেকে ওঠার উপায়।

১. অ্যালার্ম: কক্ষে অবশ্যই একটি অ্যালার্ম ঘড়ি বা স্মার্টফোনের অ্যালার্ম ব্যবহার করবেন। স্মার্টফোনটি অ্যালার্ম ঘড়ি হিসাবে ব্যবহার করতে হলে মাথার কাছাকাছি রাখা ভালো। তবে একটু দূরে রাখলে স্নুজ বাটনে চাপ দিতে হবে না।

২. ঘুমকে প্রাধান্য দিন : যেকোনো অজুহাতের কারণে রাতে ঘুমাতে যেতে দেরি হয় আপনার। কিন্তু চেষ্টা করুন প্রতিদিন রাতে তাড়াতাড়ি ও একই সময়ে ঘুমানোর এবং জেগে ওঠার।

৩. দিনের কাজ গুলো তৈরি করুন: সকালে নতুন ধরনের কিছু করার কর্মসূচি ঠিক করে রাখুন। যদি ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত ব্রাশ করা ও স্নান করা একমাত্র কাজ হয়ে থাকে, তবে আলসেমি চলে আসবেই। যদিও এগুলো প্রতিদিনের নির্দিষ্ট কাজ। তবুও নতুন কিছু করার পরিকল্পনা রাখুন। এতে ঘুম থেকে ওঠার কারণ খুঁজে পাবেন।

৪. দুপুরের ঘুমকে এড়িয়ে চলুন : যদি ডাক্তারের পরামর্শ না থাকে তাহলে দুপুরে ঘুমাবেন না। কারণ দুপুরের ঘুমের কারণেই রাতে দেরিতে ঘুম আসে এবং সকালে ওঠতেও দেরি হয়। তাই দুপুরের ঘুমকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য দুপুরে কাজ করুন বা শখের কাজের সাথে নিজেকে সংযুক্ত করুন।

৫. সকালের কাজ ঠিক করুন : সকালে করতে হবে এমন কিছু কাজের তালিকা করুন। এর ফলে আপনার ঘুম থেকে ওঠার প্রেরণা তৈরি হবে।

৬. ইলেক্ট্রনিকস যন্ত্রগুলো বন্ধ করুন : অন্তত দেড় ঘন্টা আগে আপনি আপনার সমস্ত ইলেক্ট্রনিকস যন্ত্রগুলোর সুইচ বন্ধ করুন। টিভি বন্ধ করুন। বন্ধ করুন মেইল চেক করা, সোশাল মিডিয়ায় বিচরণ এমনকি ই-বই পড়াও। এসবের পরিবর্তে বরঞ্চ যা আপনার মনকে হালকা করে এমন কিছু করুন। যেমনঃ বই পড়া, গান শোনা, ছবি আঁকা প্রভৃতি।

৭. ঘুমতে যাওয়ার আগে একটি রুটিন তৈরি করুন : ঘুমতে যাওয়ার আগে কিছু কাজ করুন যা আপনার মনকে শান্তি দিবে এবং হাপ ছাড়ার জন্য সময় নিন। যেমনঃ দরজা-জানালা বন্ধ হলো কিনা দেখুন, জলের ট্যাপ বন্ধ কিনা, গ্যাসের চুলা বন্ধ কিনা দেখুন। প্রয়োজনে কিছুক্ষন হাটাহাটি করুন। তারপরে বাত্বিগুলো নিভিয়ে দিয়ে প্রার্থনা করতে পারেন।

৮. জল পান: বিছানায় ওঠার আগে এক গ্লাস জল পান করতে পারেন। এতে ঠিক সকালে মূত্র ত্যাগের জন্যে উঠতেই হবে। ধরে নিন রাতে ৩০০ মিলিলিটার জল পান করে বিছানায় গেলে ঠিক সকাল ৭টায় ঘুম থেকে উঠতেই হবে।

৯. ঘরে সূর্যের আলো আসার ব্যবস্থা রাখুন: সকালে যেন ঠিকমত সূর্যের আলো  এসে পড়ে। ঘর যত অন্ধকার রাখবেন, ঘুম থেকে উঠতে তত দেরি হবে।

১০. ঘুম ভাঙলে বিছানা থেকে উঠে একটু হাঁটাচলা করুন: ঘুম ভাঙলে বিছানা থেকে নেমে একটু হাঁটাচলা করুন। দু তিন মিনিট হাঁটলে ঘুমঘুম ভাবটা কেটে যাবে। এরপরে এক গ্লাস জল পান করুন।

১১. নিজের মনকে পরিবর্তন করুন: অনেক মানুষ ঘুমতে যাওয়ার জন্য যুদ্ধ করে কেননা তারা অনেক কিছু করতে চায়- তাদের একটি দিন থেকে বিচ্যুতির অনিশ্চিয়তাবোধ রয়েছে। বোধহয় দিনটি শেষ হয়ে গেল। তবে ধরে নিন “ঘুম হচ্ছে পরবর্তীদিনের শুরু”। এ ধরনের চিন্তা ঘুম সম্পর্কে আপনার চিন্তাকে পরিবর্তন করবে ঘুম সম্পর্কে আপনাকে আগ্রহীও করে তুলবে। মনে রাখবেন “ঘুম হচ্ছে একটি সক্রিয় উপাদান, এতে আপনি নিজের ব্যাটারি চার্জ করে নিতে পারেন”।

১২. ধৈর্য ধরুন : একদিন সকালে ব্যর্থ হলেই চিন্তিত হয়ে পড়বেন না। চেষ্টাই হবে আপনার কৌশল। আপনার শরীর হয়তো নির্দিষ্ট ঘুমের ধরনের প্রতি অভ্যস্ত হয়ে গেছে, নতুন অভ্যাস তৈরি করতে কিছুটা সময়তো লাগবেই। তাই আপনার শরীরকে নতুন অভ্যাস আয়ত্তে নিতে সময় দিন। প্রথম দিনই হয়তো আপনি ব্যর্থ হবেন, কিন্তু সপ্তাহ শেষে দেখবেন যে নতুন এই অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেছে আপনার শরীর।