Friday, March 29, 2024
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে চলন্ত বাসে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা

বাংলাদেশে ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে করে শুক্রবার রাতে সিরাজগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে চলন্ত বাসের মধ্যে এক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে জঙ্গলে লাশ ফেলে দেয়। এই ঘটনায় পুলিশ মঙ্গলবার ওই বাসের চালক, সুপারভাইজারসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। ছোঁয়া পরিবহনের ওই বাসটিকেও জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ বাসটির চালকসহ ৫জনকে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার আদালতে হাজির করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। গ্রেফতারকৃত পাঁচজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের রোমহর্ষক বিবরণ সামনে আসে। টাঙ্গাইলের আদালতেতাদের মধ্যে তিনজন ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত থাকার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের তিনজন মঙ্গলবার টাঙ্গাইলের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

“মেয়েটি তাদের বলেছিল, সঙ্গে যা টাকা পয়সা আছে, তা নিয়ে যেন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে, মাথা থেঁতলে তাকে হত্যা করে লাশ রাস্তায় ফেলে চলে যায় বাসের কর্মচারীরা।”

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মাহবুব আলম জানিয়েছেন, নিহত জাকিয়া সুলতানা রূপার বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশে। ঢাকার আইডিয়াল ল কলেজে পড়াশুনা করতেন। পড়াশুনার পাশাপাশি একটি কোম্পানির প্রোমশনাল ডিভিশনে কাজ করছিলেন তিনি। তার কর্মস্থল ছিল ময়মনসিংহ জেলা সদরে।

বাসটি বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী নেমেছে। এরপর বাসে ঐ তরুণী ছাড়া আর কোন যাত্রী ছিল না। তখন বাসটি মধুপুরের জঙ্গলে দিকে রাস্তায় গিয়ে চলন্ত বাসেই ঐ তরুণীকে ধর্ষণের পর পর গলা টিপে, ঘাড় মটকে হত্যা করে।

এই তরুণীর বড় ভাই হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, তাঁর বোন শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে শুক্রবার বগুড়া গিয়েছিলেন।

এরপর সেখান থেকে সন্ধ্যায় এক সহকর্মীর সাথে কর্মস্থল ময়মনসিংহে যাওয়ার জন্য ছোঁয়া পরিবহনের বাসে উঠেছিলেন। তাঁর সহকর্মী টাঙ্গাইলে এলেঙ্গায় নেমে যান।

হাফিজুর রহমান বলেন, তাঁর বোনের সাথে শুক্রবার রাত ১০:৩০ পর্যন্ত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল। এরপর বাসের হেলপার ফোন ধরে তা বন্ধ করে দিয়েছিল।

হাফিজুর রহমান বলেছেন, গ্রেফতারকৃতরা তাঁর বোনকে ধর্ষণের পর গলা টিপে এবং ঘাড় মটকে হত্যার যে বর্ণনা আদালতে দিয়েছে, আদালতে তা শুনে তিনি শিউরে উঠেছিলেন।

“এত নির্মমভাবে ধর্ষণের পর ঘাড় মটকে হত্যা করেছে। আদালতে আসামীরা যখন বর্ণনা দেয়, আমার তখন কলিজা ফেটে যাচ্ছিল। শুনে মনে হচ্ছিল, এরা পশুর চেয়েও অধম। এদের সর্বোচ্চ শাস্তি আমি চাই।”

মামলাটি দায়ের করেছে হাফিজুর রহমান। পুলিশ বলেছে এখন মামলায় অল্প সময়ের মধ্যে চার্জশিট দেয়া সম্ভব হবে। বিবিসি